ক্যান্সারের কেন হয় ও ক্যান্সারের প্রধান কারনগুলো জেনে নিন ।

আমরা দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশে বাস করি । যার নাম সোনার বাংলাদেশ । আমাদের দেশে যদিও জনসংখ্যা ১৮ কোটি কিন্তু তার মাঝে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারেআক্রান্ত । এদের অধিকাংশ মানুষই সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত । ক্যান্সার রোগীর গড়ে চারজনই তিনজন অল্প সময়ে মারা যাচ্ছে । এই মারা যাওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে ক্যান্সার কি সেই বিষয়টি সম্পর্কেসঠিক না জানা, সঠিক চিকিৎসার অভাব এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ কারী খাদ্য বস্তু থেকে দূরে থাকা । একমাত্র সচেতনতাই পারে আমাদের কে ক্যান্সার থেকে বাঁচিয়ে রাখতে । আমরা নিজেরাও জানি না যে আমাদের ছোট ছোট ভুলের কারণে ভুলের কারণে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি ক্যান্সারের মত ঘাতক মরণব্যাধিতে । চলুন জেনে নেয়া যাক ক্যান্সার কেন হয়?

ক্যান্সার হওয়ার প্রধান কারন  সমুহঃ ক্যান্সার সম্বন্ধে আপনি যদি একদমই না জেনে থাকেন তবে আমাদের এই আর্টিকেল টি দেখতে পারেন ।

১। জেনেটিক বা বংশগত কারণ:
অনেক সময় জিনগত বা হরমোনগত কারণেও ক্যান্সার হয়ে থাকে । এক্ষেত্রে যাদের মা, বাবা, দাদা, দাদি ও নিকটাত্মীয় ক্যান্সার আক্রান্ত থাকে ,তাদের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অন্য মানুষের তুলনায় বেশি । বংশগত কারণে প্রধানত স্তন ক্যান্সার, কোলোন ক্যান্সার, ও ব্লাড ক্যান্সার হয় ।

২। ধূমপানঃ
আমাদের দেশে শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ ধূমপান করে থাকে । ধূমপান ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য মারাত্মক ভাবে দায়ী । ধূমপানকারী ও তার আশেপাশে বসবাসকারী মানুষ ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে । তাই অবশ্যই আমাদের যুব সমাজকে ধুমপান মুক্ত হতে হবে ।

৩। তামাক জাতীয় দ্রব্য গ্রহণঃ
আমাদের গ্রাম এলাকায় অধিকাংশ মহিলারা পান, জর্দ্‌ গুল ইত্যাদি গ্রহণ করে থাকে । যা মুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী । এমন কি এই পান জর্দা খাওয়ার ফলে অনেক মানুষের জিহ্বা ও দাঁতের গোঁড়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুমুখী হয়েছে ।

৪।টিউমারঃ
আমাদের শরীরে অনেক সময় অনেক টিউমার দেখা দেয় । এই টিউমার দীর্ঘ দিন থাকলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । কারন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হল টিউমার । তাই যখন আমাদের দেহে টিউমার দেখা দেয় তখন অবশ্যই অতি দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে । কারণ শতকরা ২৫% টিউমার থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
৫। রেডিশনঃ
Radiation যার বাংলা অর্থ হলো রশ্নি । সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্নি থেকে ত্বকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । যুক্ত রাষ্ট্র ভিত্তিক এক গর্বেষনা প্রতিষ্ঠান একতি প্রতিবেদনে প্রকাশ করছে যে মোবাইল নেটওয়ার্ক এর অতিরিক্ত তরঙ্গের ফোলে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে । কাজেই আমাদের বাসা বাড়ির ছাঁদে টাওয়ার নির্মাণ থেকে দূরে থাকতে হবে । পারমানবিক বিস্ফোরণ থেকেও ক্যান্সার হয়ে থাকে । যেমন জাপানের হিরোশিমা শহরে পারোমানিক বোমার বিস্ফোরণের বহু বছর পরেও জন্ম নেওয়া প্রাণীদেহে ক্যান্সার দেখা দিচ্ছে ।
৬।পাথর বা stone
আমাদের দেহের বিভিন্ন স্থানে পাথর বা stone দেখা দেয় ,যেমন কিডনি বিভিন্ন নালীতে পাথর দেখা দেয় । এসব পাথর দীর্ঘদিন যাবত ওই জায়গায় থাকলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।

৭। ইনফেকশণঃ
দেহের বিভিন্ন অংশ ইনফেকশন হতে পারে । যেমন জরায়ু ইনফেকশন বা কোন অংশ কেটে গেলে ছত্রাক আক্রমণ । এই ধরনের আক্রমণ থেকে ক্যান্সার হতে পারে । কাজেই যখন আমাদের দেহের কোন অংশে ছত্রাক আক্রমণ দেখা দেবে তখন অবশ্যই ছত্রাকনাশক তথা ডাক্তারি পরামর্শ নিতে হবে ।
৮। পত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাসায়নিক খদ্য গ্রহনঃ
আমাদের জানার অঘোচরেই অনেক রাসায়নিক খদ্য দ্রব্য আমাদের শরিরে প্রবেশ করতেছে । অনেক পোল্টি ফার্মে দ্রুত লাভের জন্য খাদ্যর সাথে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে । যা প্রোক্ষভাবে আমাদের শরিরে প্রবেশ করে ক্যান্সার সৃষ্টি করতেছে । এমন কি মৎস্য চাষীরাও পিছিয়ে নেয় । তারাও ট্যানারির বর্জ মিশ্রিত খাদ্য মাছ চাষে ব্যবহার করে গ্রাহক দেহে বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায় নিক পদার্থ ডুকিয়ে দিচ্ছে । আমাদের উচিৎ এই গুলোর বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলা ।
৯। ভুল চিকিৎসাঃ
বর্তমানে অনেক ডাক্তার ভুল চিকিৎসায় প্রদান করে যার কারণে বহু মানুষের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে । অনেক ডাক্তার বিভিন্ন হরমোনাল ইনজেকশন দিয়ে থাকে , যা ব্যবহার করে ব্যবহারকারী ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে । তাই কোন হরমোনাল ইনজেকশন গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে ।
১০। নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণঃ
বর্তমান প্রজন্মের অনেক মানুষ মদ্যপান বা বিভিন্ন ধরনের অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকে । যার মাশুল হিসেবে আক্রান্ত হয় ক্যান্সারের মত মরনব্যাধীতে ।অ্যাালঅকোহল বা কোলড্রিংকস দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে পরিপাক নালীর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । তাই আমাদের কে সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে ।

১১। সচেতনতার অভাবঃ
এটি ক্যান্সারের প্রধান কারণ। আমরা যদি সচেতন হয় তাহলে ক্যান্সার হতে আমরা তথা আমাদের দেশ মুক্ত পাবে । আমাদের দেশে সচেনতার অনেক অভাব রয়েছে । ক্যানসারের কারন গুলো না জানার ফোলে অনেকেই হর হামেশায় ক্যান্সারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । যেমন বর্তমান সময়ে মেয়েরা মুখে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল জাতীয় ক্রিম ব্যবহার করে। তাদের ধারণা এই ক্রিমগুলো অল্প দিনের ভিতরেই মুখ ফর্সা করে ফেলবে । কিন্তু তারা জানে না যে ত্বক ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । আমাদের কে সুধরাবে? আমাদের নিজেদের ই সুধরাতে হবে । আমাদের সচেন হতে হবে ।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.