সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা কী এবং করণীয় কী?
সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা কী এবং করণীয় কী?
সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা কী?
সাইনোসাইটিস একটি প্রচলিত সমস্যা। সাইনোসাইটিসে প্রথমে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। তবে এতে না সারলে সার্জারি করে চিকিৎসা করা হয়।
প্রথমে রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ও সঙ্গে অ্যান্টিহিসটামিন দেয়া হয়। স্টিম ইনহেলেশন (নাকের মধ্যে বাষ্প টানা) করতে হয়। সাইনাসের যে ড্রেনেজটা বন্ধ ছিল, বাষ্প টানার কারণে এটি সচল হয়ে যাবে।
প্রথমে পানি গরম করে নিতে হবে। বাজারে মেনথল (এক ধরনের দানা দানা ওষুধ) পাওয়া যায়। এর দুটো থেকে তিনটি দানা গরম পানিতে নেওয়ার পর কিছু বাষ্প উঠবে। সেই বাষ্প নাক দিয়ে দিনে তিনবার টানতে হবে। সাধারণত ১০ দিন বা ১৪ দিন নিয়মিত করলে উন্নতি হয়।
চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে অ্যান্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি করা হয়। এটি এখন খুব জনপ্রিয় চিকিৎসা। এটি মিনিমাল ইনভেসিভ সার্জারি। খুব কম ঝুঁকি এতে। বাহির দিয়ে কোনো কাটাছেঁড়ার দরকার পড়ে না। অ্যান্ডোস্কোপির মাধ্যমে এই অস্ত্রোপচার করা যায়।
একটি টেলিস্কোপ, সঙ্গে একটি ক্যামেরা ও একটি মনিটর থাকে। এটি দুইভাবে করা যায়। পুরোপুরি অজ্ঞান করে করা যায়। স্থানীয়ভাবে অবশ করেও করা যায়। সাধারণত পুরোপুরি অজ্ঞান করে করাটাই ভালো। সার্জন সামনে থাকবেন। একটি মনিটর থাকবে। অ্যান্ডোস্কোপি সেট করে মনিটরে দেখে দেখে ড্রেনেজটাকে পরিষ্কার করে দেবে।
সাইনোসাইটিসের চিকিৎসায় করণীয়
প্রশ্ন : সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা কীভাবে করা হয়?
উত্তর : একিউট (স্বল্পমেয়াদী) সাইনোসাইটিস ও ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদী) সাইনোসাইটিসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একিউট অবস্থায় মেডিকেল চিকিৎসা দেয়া হয়। অ্যান্টিবায়োটিক এর সঙ্গে অ্যান্টি হিস্টামিন, নাকের ড্রপ দিতে হয়। মেন্থল পানিতে নিয়ে ভাপ নিতে হয়। নাক দিয়ে ভাপ নিয়ে মুখে ছাড়তে হয়। এতে করে দেখা যায় সাত বা ১০ দিন পর প্রদাহ সেরে যায়। এর সঙ্গে ব্যথানাশক ওষুধ দিলেও, তার জ্বর কমে যায় এবং ভালো হয়ে যায়।
প্রশ্ন : সাইনোসাইটিস বার বার হলে করণীয় কী?
উত্তর : যখন একিউট (স্বল্পমেয়াদী) বা কোনো সাইনোসাইটিস ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদী)-তে পরিণত হয়, অর্থাৎ ক্রমাগত সে অ্যালার্জির সম্মুখীন হচ্ছে বা ক্রমাগত সে ঠান্ডার সম্মুখীন হচ্ছে, কনজারভেটিভ চিকিৎসা যখন শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন হয়তো আবার সে ধূমপান বা ঠান্ডা খাওয়ার অভ্যাস করছে। ধূমপান করছে। এতে করে দেখা যায় সে আবার সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। তার হয়তো মেডিকেল চিকিৎসায় হচ্ছে না, তখন সার্জারি করতে।
প্রশ্ন : সাইনোসাইটিস যাতে আবার না হয় সে জন্য পরামর্শ কী থাকে?
উত্তর : সার্জারি এখন অত্যন্ত এগিয়ে গেছে। যেমন অ্যান্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি রয়েছে। এর মাধ্যমে নাকের প্রতিটা অংশ, সাইনাসের প্রতিটা অংশ, অত্যন্ত বড় আকারে মনিটরে দেখা হয়, পলিপ বা সাইনাসের কিছু প্রদাহ, সবকিছু বের করে নিয়ে আসা হয়। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুব কমে যায়। এরপরও সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের সাইনোসাইটিস না কি মাইগ্রেন, না কি নিউরোলজিক্যাল ব্যথা, বা তার চোখের দৃষ্টির জন্য কোনো কিছু হচ্ছে, তাও তাদের সতর্ক থাকতে হবে। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও নিউরোজিস্টকেও তারা দেখাতে পারবে।
এরপর যদি এক্সরে ও সিটি স্ক্যান করে দেখা যায় সাইনাসই আক্রান্ত হয়েছে, তখন তাকে সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা দেয়া হয়।